রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট ভর্তি প্রস্তুতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিট হলো বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য।অর্থাৎ যারা এসএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ হতে উত্তীর্ণ হয়েছে শুধুমাত্র তারাই সি ইউনিটের জন্য প্রযোজ্য হবেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট ভর্তি প্রস্তুতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিট সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর আজকের পোস্টে আলোচনা করেছি। যে সকল টপিকের উপর আলোচনা করা হয়েছে তা হলো:-
আজকের আলোচনার টপিকগুলো:-
- রাবি গ ইউনিট সাবজেক্ট লিস্ট
- রাবি গ ইউনিট বিভাগ ও আসন সংখ্যা
- রাবি গ ইউনিট ভর্তি পদ্ধতি
- রাবি গ ইউনিট আবেদন যোগ্যতা
- রাবি গ ইউনিট পাশ নাম্বার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট সাবজেক্ট লিস্ট ২০২৩
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিটে সর্বমোট সাতটি অনুষদ বিদ্যমান।
- বিজ্ঞান অনুষদ
- প্রকৌশল অনুষদ
- জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদ
- কৃষি অনুষদ
- ফিশারি অনুষদ
- ভেটেনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদ
- ভূ-বিজ্ঞান অনুষদ
প্রতিটি অনুষদের নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা রয়েছে এবং অনুষদের আওতায় আলাদা আলাদা সাবজেক্ট রয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত বিভাগের আসন সংখ্যা সর্বমোট ১৫৯৪ টি।
সাতটি অনুষদের অন্তর্ভুক্ত সাবজেক্ট গুলো এবং আসন সংখ্যা ক্রমান্বয়ে দেওয়া হলো:-
বিজ্ঞান বিভাগ:-
- পদার্থবিজ্ঞান -৯০
- গণিত -১১০
- রসায়ন -১০০
- পরিসংখ্যান -৯০
- প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান -৫০
- ফলিত গণিত -৮০
- ফার্মেসি -৫০
- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ -৩০
- পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্সডেভেলপমেন্ট -৬০
প্রকৌশল অনুষদ:-
- কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
- ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল
- ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং
- ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
- ম্যাটারিয়াল সাইন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
কৃষি অনুষদ:-
- এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন -৫৬ টি
- ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগ -৫৬
জীববিজ্ঞান অনুষদ:-
- উদ্ভিদবিজ্ঞান -৭০
- মনোবিজ্ঞান -৭০
- প্রাণিবিদ্যা -৮০
- চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান -৩০
- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি -৪০
- মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ -৩০
ভূ বিজ্ঞান অনুষদ:-
- ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ -৬০
- ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা -৭৬
ফিশারীজ অনুষদ:-
- ফিশারীজ বিভাগ -৫০
ভেটেনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস অনুষদ:-
- ভেটেনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস বিভাগ -৫০
আরো পড়ুন:- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য ২০২২-২০২৩
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গ ইউনিট আবেদন যোগ্যতা:-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২২-২৩ এ উল্লেখিত মানবিক বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আলাদাভাবে আবেদন যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সি ইউনিট বা বিজ্ঞান বিভাগ:-
বিজ্ঞান বিভাগের আবেদনের জন্য অন্যতম জিপিএ ৭.৫০ থাকতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি / গ ইউনিট ভর্তি পদ্ধতি:-
রাবি সি ইউনিটে সর্বমোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন করা হয়। টোটাল ৮০ টি প্রশ্ন থাকে যার প্রতিটির মান ১.২৫।
নেগেটিভ মার্কিং:-
নেগেটিভ মার্কিং রয়েছে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত নাম্বার থেকে ০.২০ নাম্বার করে কাটা হবে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচটি প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য এক নাম্বার ১ নাম্বার কর্তন করা হবে।
রাবি গ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় বিষয় সমূহ এবং নাম্বার:-
- পদার্থবিজ্ঞান -৩১.২৫ নাম্বার - প্রশ্ন সংখ্যা -২৫ টি
- উচ্চতর গণিত - ৩১.২৫ নাম্বার - প্রশ্ন সংখ্যা -২৫ টি
- রসায়ন -৩১.২৫ নাম্বার- প্রশ্ন সংখ্যা -২৫ টি
- জীববিজ্ঞান -৩১.২৫ নাম্বার - প্রশ্ন সংখ্যা -২৫ টি
- আইসিটি -৬.২৫ নাম্বার - প্রশ্ন সংখ্যা -৫ টি
- জীববিজ্ঞান + উচ্চতর গণিত -৩১.২৫ নাম্বার - প্রশ্ন সংখ্যা -২৫ টি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাবজেক্ট লিস্টের ভিত্তিতে আসন সংখ্যা পূর্ণ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর প্রাপ্য শিক্ষার্থীদের নিয়েই মেরিট লিস্ট প্রকাশ করা হয়।মেরিট লিস্টে যারা এগিয়ে থাকবে ক্রমানুসারে তারাই সাবজেক্ট পাবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট পাশ নম্বর:-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিটে উত্তীর্ণ হতে হলে প্রতিটি বিষয়ে আলাদাভাবে পাশ মার্ক থাকতে হবে।
এই চারটি বিষয়ে কোন একটিতে পাশ নম্বর না পেলে ফেইল হিসেবে গণ্য করা হবে। প্রতিটি বিষয় মিলে সর্বমোট ৪০ নম্বর হলেই একজন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হবেন। তবে সাব্জেক্ট ভিত্তিক আসন পাওয়ার জন্য অবশ্যই মেরিট লিস্টে এগিয়ে থাকতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিট ভর্তি প্রস্তুতি:-
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা এখন একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের নাম। কেননা একটি আসনের জন্যই ৫০ থেকে ৬০ জন অথবা তারও বেশি শিক্ষার্থী লড়াই করে থাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটের আসন সংখ্যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের আসন সংখ্যা থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি তাই এখানে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও অনেক বেশি হয়ে থাকে। মাত্র ১৫০০ আসনের জন্য গড়ে প্রায় ৭২ হাজার শিক্ষার্থী লড়াই করে থাকে।
তাই অতিরিক্ত পড়ার চেয়ে কৌশলগত পরিশ্রম আপনার চান্স নিশ্চিত করতে পারে।
আর্টিকেলের এ পর্যায়ে প্রতিটি বিষয়ের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত তা দেখব।
পদার্থ বিজ্ঞানঃপদার্থবিজ্ঞানের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো সূত্র সমূহ যা আলাদাভাবে নোট করে নিতে হবে। ইসহাক স্যারের বইয়ের প্রথম দিকর ম্যাথ গুলো ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে। পাশাপাশি শর্টকাট গুলো ভালোভাবে দেখে রাখতে হবে।
পরীক্ষায় কঠিন কিংবা বড় ম্যাথগুলোর চেয়ে ছোট অথবা সময় কম লাগে এমন ম্যাথ আগে করার চেষ্টা করবেন। থিউরির মধ্যে শাহজাহান তপন স্যারের বইয়ের বক্সে লেখা গুরুত্বপূর্ণ লাইন গুলি আগে শেষ করবেন। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সি ইউনিটের বিগত বছরের রিপিট হওয়া প্রশ্নগুলো সলভ করবেন।
যে টপিকগুলো মনে রাখা একটু কঠিন হয়ে যায় সেগুলো বারবার রিভিশন করার পাশাপাশি সে পড়বেন। পরীক্ষার একেবারে আগে নতুন টপিক পড়ার দরকার নেই।
পদার্থবিজ্ঞানের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক:-
মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ চ্যাপ্টারের সূত্র সমূহ, গতিসূত্র গুলো, ভেক্টরাশি ও স্কলাররাশি এবং ডটগুনণ ও ক্রস গুনণ,আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরণ থেকে সূত্র সমূহ ইত্যাদি।
রসায়ন:-
রসায়নের জন্য হাজারী নাগ স্যারের বইটি ফলো করবেন। রসায়নের যেহেতু পড়ার পরিমাণ যথেষ্ট বেশি, তাই সবার আগে কোন কোন টপিকস থেকে কুয়েশ্চন আসে তা নির্ধারণ করবেন। সবচেয়ে বেশি রিপিট হওয়া প্রশ্নগুলোর থিওরিগুলো আগে শেষ করবেন। জৈব রসায়নের প্রথম দিকের থিওরিগুলো থেকে অনেক প্রশ্ন এসে থাকে। এছাড়াও জৈব রসায়ন থেকে পার্থক্যকরণ বিক্রিয়াগুলো প্রায়ই এসে থাকে। রসায়নে বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে সবচেয়ে বেশি রিপিট হয়ে থাকে।রসায়নে ম্যাথের তুলনায় বিক্রিয়া অংশ বেশি পড়তে হবে
উচ্চতর গণিত:-
ভার্সিটি প্রশ্নগুলোতে উচ্চতর গণিতের ক্ষেত্রে জটিল ম্যাথ গুলো সাধারণত দেয়না।বেসিক ম্যাথগুলো থেকে কোয়েশ্চেন করা হয়। যেমন ভেক্টর এর ক্ষেত্রে সমান্তরাল ও লম্বা হওয়া শর্তগুলো দিয়ে থাকে, কিন্তু আয়তন কিংবা ক্ষেত্রফল বের করার ম্যাথগুলো সাধারণত দেওয়া হয় না। ম্যাচের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্র্যাকটিস করতে হবে কত দ্রুত ম্যাথটি করা যায়।ইন্টিগ্রেশন এর ক্ষেত্রে সূত্র থেকেই অনেক কোশ্চেন করা হয়। কিছু চ্যাপ্টার আগে পড়া না থাকলে স্কিপ করাই ভালো যেমন স্থিতিবিদ্যা এবং গতিবিদ্যা। এছাড়াও যোগাশ্রয়ী প্রোগ্রামিং থেকে আসা ম্যাথ গুলো যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ।
*দ্বিপদী বিস্তৃতি চ্যাপ্টার থেকে X বর্জিত পদ এবং n তম পদের ম্যাথগুলো সবচেয়ে বেশি রিপিট হয়। ত্রিকোণমিতি প্রথম এবং দ্বিতীয় পত্রের জন্য সূত্রনির্ভর প্রবলেমগুলো প্রথমেই সলভ করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় বোর্ড প্রশ্নের নৈবিত্তিক আগে সলভ করা। সেখান থেকে প্রায়ই প্রশ্ন কমন পাওয়া যায়। উচ্চতর গণিতের জন্য টাইম ইফিচিয়েন্সি বাড়ানো সবচেয়ে বেশি ইফেক্টিব হবে।
জীববিজ্ঞান:-
জীববিজ্ঞানের প্রধানত দুটি পার্ট রয়েছে।
১.উদ্ভিদবিজ্ঞান ২. প্রাণীবিজ্ঞান
উদ্ভিদবিজ্ঞানের তুলনায় প্রাণিবিজ্ঞানের অধ্যায়গুলো তুলনামূলকভাবে সহজ।
উদ্ভিদবিজ্ঞান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিকস:-
যেকোনো অংশের সংজ্ঞা, উদাহরণ এবং পার্থক্যসমূহ।
উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাসহ, মূলপাতা ও বৈজ্ঞানিক নাম।
প্রস্বেদন, শ্বসন ও সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া
এছাড়াও টিস্যুতন্ত্রের বিষয়গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
প্রাণিবিজ্ঞান হতে:-
★★★হাইড্রা
ম্যালেরিয়ার জীবাণু, কোষ ও কলা
প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নামসমূহ ইত্যাদি
আরো কিছু অধ্যায় যেমন পেশিতন্ত্র, রেচনতন্ত্র এবং প্রাণীর প্রজননতন্ত্র পড়তে হবে।
আইসিটি:-
আইসিটি থেকে প্রথম অধ্যায়ের থিওরিগুলো মোটামুটি ইমপর্ট্যান্ট।
কিছু টপিক যেমন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, গ্লোবাল ভিলেজ, ক্রায়োসার্জারি, বায়োমেট্রিক্স, ন্যানোটেকনোলজি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছড়াও জেনেটিক টেকনোলজি, ওয়াইফাই, ডেটা ট্রান্সমিশন, হাব এবং সুইচ,ক্লাইড কম্পিউটিং থেকে প্রায়ি প্রশ্ন আসে।
গেইট হতে সার্বজনীন গেইট, লজিক গেইট, এনকোডার, ডিকোডার, ওয়েবসাইট কাঠামো, হাফ বা ফুল এডার এর বাস্তবায়ন পড়তে হবে।
কম্পাইলার, HTML,ইন্ট্রারপোলার,লিপ ইয়্যার ডেটা টাইপ, এলগরিদম ও ফ্লোচার্ট, DBMS ভালো ভাবে পড়লেই ইনশাআল্লাহ প্রিপ্রারেশন হয়ে যাবে৷